ঘন ঘন আমেরিকার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা , যখন তখন কোন দেশের রিজার্ভ ফ্রিজ করে দেওয়া ডলার পতনের মুল কারন হবে ।
মিডল ইস্ট এর সাথে ডলার আধিপত্যের সরাসরি যোগ রয়েছে । কেননা ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় তেল সরবাহকারী ছিল মিডল ইস্ট এর দেশ গুলো । বাট তেল সরবাহ করার পরও তাদের অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ার কারন ছিল তেলের দাম কম থাকা । পরবর্তীতে আরব বসন্তের কল্যানে মিডল ইস্ট এর রমরমা অবস্থা তেলের দাম হু হু করে বেড়ে গেছে সাথে সাপ্লাই বেড়ে গেছে । এমন অবস্থায় তেল নির্ভর আমেরিকার পথে বসার উপক্রম । সেই সময়ে প্রেসিডেন্ট নিক্সন থাকাকালীন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জার সামহাউ সোদি আরবকে (বাদশা ফয়সালকে) কনভিন্স করে ফেলে । ফলে ৬ মাস ইসরায়েল এর উপর কোন সফলতা ছাড়াই অবরোধ তুলে নে ।
এর পিছে কয়েকটা কারন আছেঃ
- ১। অবরোধের কারনে সৌদির পাশের দেশ মিশর , কাতার ইত্যাদি বিপুল অর্থ আয় করছিল যা বাদশা ফয়সাল এর পছন্দ হয় নাই
- ২।তেলের দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে রাতারাতি অবস্থা পরিবর্তন হওয়ায় লোভ কাজ করা
- ৩।সৌদ বংশের উপর কমিউনিস্টদের থ্রেড । কারন অলরেডি সিরিয়া , ইরাকে কমিউনিস্ট রা রাজবংশ বিলুপ্ত করে দিয়েছিল
মুলত এক কয়েকটা কারনে বাদশা ফয়সাল মিডল ইস্ট বেশ ভাল গুটিবাজি করে । ফলে আমেরিকার সাথে এক গুপন চুক্তি হয়
চুক্তি এমন ছিল – তেলের দাম এখন থেকে ডলার এ ঠিক হবে পরিশোধ করতে হবে ডলারে , এর পরিবর্তে সৌদিকে আমেরিকার সর্বোচ্চ সামরিক সহায়তা দিবে এমনকি দরকার হইলে আমেরিকার পুরো মিলিটারি ফোর্স দিতে হবে !!! এই চুক্তির ফলে সৌদ বংশের বংশ রক্ষা হয় ! যদি এমন কথা আছে বাদশা ফয়সাল পরে ভুল বুঝতে পেরেছে । আসলে এমন কিছুই নাহ বাদশা ফয়সাল চাইতো জেরুজালেম মুক্ত হোক বাট নিজ বংশ এর চেয়ে বেশি ইম্পোর্ট্যান্ট নাহ ।
এবার আসি এই দশকে তেলের খেলা পুরোপুরি চেইঞ্জ । বর্তমানে পৃথিবির অন্যতম তেল উৎপাদনকারী দেশ আমেরিকা খুদ নিজেই যারর ফলে সৌদি থেকে তেল উৎপাদন করতে হচ্ছে নাহ । সেকেন্ডলি রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যু এর কারনে বাইডেন প্রসাশন ইরান এর সাথে মধ্যস্ততায় চলে গেছে উলটো তাদের এখন আমেরিকার ছায়ায় নিউক্লিয়ার প্লান্ট করার ডিল এ পৌছেছে যা সৌদি আরবের জন্য ওপেন থ্রেড । যার কারনে ফ্রেন্ডস ফরেভার এর পাশার দান উলটো হয়ে গেছে ।
বর্তমানে সৌদির সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছেঃ
- ১।তাদের সব থেকে বড় ক্রেতা আমেরিকাকে হারানো ।
- ২।নিজের কোন ব্যালাস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র না থাকা ।
- ৩।ইকোনোমিক্স ডাইভার্সিটি না থাকা , তেল ভিত্তিক অর্থনীতি হওয়া ।
- ৪।প্রপার টেননোলজি এবং ইনিশিয়াল ইনভেস্টমেন্ট না থাকা।
- ৫।আমেরিকার বিশেষ প্রেমিকার খাতা থেকে বাদ যাওয়া ।
- ৬।প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা না থাকা । বিশেষ করে সৌদির চির শত্রু ইরান এর বিরুদ্ধে ।
ঠিক এই জায়গায় আমাদের চীন অপার্চুনিটি টেকার । আপনি চীনকে যতই লোন ট্র্যাপ এর জন্য গালাগালি করতে পারেন বাট আমার মনে হয় চীন এইটা ডিজার্ভ করে ।
কেন ?
প্রথম চীন কাউকে ফোর্স করে নাহ , লোন এর বদলে ফাউ লেকচার শুনায় নাহ আমেরিকার মত নারীবাদসহ হাজারো অধিকার বাদ এর কথা । সেকেন্ডলি চীন কউকে ধরা বাধা দে নাহ , হ্যা আমার লোন নিয়ে তোমাকে ঐ খাতে ট্যাক্স বাড়াইতে হবে সেই খাতে কমাইতে হবে যেমনটা প্রতিবছর আইএমএফ করে থাকে ।
চীনের লোনের প্রক্রিয়া হচ্ছে , আমি অর্থ দিচ্ছি তোমার যেভাবে ইচ্ছাহ খরচ কর, দিন শেষে আমার লোন ফেরত পেলেই চলে । ঠিক এইদিকে এসেই লংকার এর মত দেশ গুলা লোভ সামলাতে পারে নাহ তাদের সরকার , মন্ত্রী-আমলারা, প্রপার সাসটেইনেবল প্ল্যানিং এবং ম্যানেজমেন্ট না থাকায় লোন গুলা ইফিশিয়েন্ট এবং ইফেক্টিভলি ইউটিলাইজ করতে পারে নাহ । এইখানে ট্র্যাপ এ পড়ে শ্রিলংকারা ।
আবার ফিরে যাই, আগের সমস্যায় এই সমস্যা সমাধান এর জন্য প্রথমত সৌদির নিজের নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট দরকার । ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়ন এর জন্য দরকার কোটি কোটি মেগাওয়াট বিদ্যৎ । তারপর নিজেদের ব্যালাস্টিক মিসাইল এর জন্যও দরকার নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট । ঠিক সেই কারনে ইসরায়েল এর সাথে সম্পর্কের বৈরীতা দেখা যাচ্ছে । তারা পরোক্ষভাবে চায় নাহ সৌদিতে নিউক্লিয়ার এনার্জী নামক কিছু থাকুক । ফলে আমেরিকার বাইডেন প্রশাসন সৌদিকে এই সুবিধা গুলো দিতে পারছে নাহ । অন্যদিকে ইরান নিউক্লিয়ার এনার্জী এর দিকে আগাচ্ছে । যা ওপেন থ্রেড ।
এই জায়গায় এসে চীন “একের ভেতর সব” সমাধান, সবচেয়ে অপাচুনিটি ট্যাকার । মিডল ইস্ট এর দেশ গুলোর প্রত্যেকের সাথে প্রত্যেকের গেঞ্জাম সমুহ মিটমাট করে দিচ্ছে । সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ ছিল সৌদিকে ইরান এর সাথে কোলাকোলি করে তাদের ভিতরকার সমস্যা গুলা নিরসন করা । এর ফলে মিডল ইস্ট এর সবচেয়ে বড় শ্ত্রু বন্ধু হয়ে গেল । অন্যদিকে চিনের সহায়তায় বাকি ৬ টা সমস্যা সমাধান করে ফেলতে পারছে । এইদিকে আমেরিকাকে আস্তে আস্তে হটিয়ে চীন জায়গা দখল করছে ।
অন্যদিকে আমেরিকা ডলারকে ঊইপেনাইজ করা ডলার নির্ভর দেশ গুলোকে চিন্তিত করছে ফলে তারা চাচ্ছে পুরো ডলার নির্ভর না হয়ে অন্য একটা অল্টারনেটিভ দিকে যেতে । সেই দিক থেকে ইউয়ান বেস্ট অল্টারনেটিভ ।
ডলার ব্যবহারের প্রবণতা থেকে সরে আসার পেছনে ভূ-রাজনৈতিক উদ্বেগও ভূমিকা রাখছে। ন্যাটওয়েস্ট মার্কেটসের গালভিন শিয়া বলেন, বৈশ্বিক রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মার্কিন ডলার কতটা নিরাপদ আশ্রয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যা বিশ্বকে ব্যাপক ঝুঁকি ও পরিবর্তনশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
বাট ডলার অল্টানেটিভ হিসেবে ইউরো, ইউয়ান,ইয়েন এখনো বেশ অপরিপক্ক ফলে হুট করে সরে আসা পসিবল নাহ তবে এটা শিউর যে সামনের কয়েকবছরের মধ্যেই ডলার এর আধিপত্য কমবে । ভু-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক কারনেই ।